কোপা দু মুন্দো দা ফিফা ব্রাজিল ২০১৪ | |
---|---|
টুর্নামেন্টের বিবরণ | |
স্বাগতিক দেশ | ব্রাজিল |
তারিখসমূহ | ১৩ জুন - ১৩ জুলাই |
দলসমূহ | ৩২ |
ভেন্যু(সমূহ) | ১২ (১২টি আয়োজক শহরে) |
← ২০১০
২০১৮ →
|
২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ (ইংরেজি: 2014 FIFA World Cup) হচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপের ২০তম আসর। এটি একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা যা অনুষ্ঠিত হবেদক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে। ২০১৪ সালের ১৩ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।[১]
এটি হবে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপের পর ব্রাজিলের আয়োজিত দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। সেই সাথে মেক্সিকো, ইতালি, ফ্রান্স এবং জার্মানির পর ব্রাজিল হবে পঞ্চম দেশ যারা প্রত্যেকে দুইবার করে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। এছাড়াও ১৯৯৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপ আয়োজনের পর এটি হবে আমেরিকা মহাদেশে আয়োজিত প্রথম বিশ্বকাপ। সেই সাথে ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনায় আয়োজিত বিশ্বকাপের পর দক্ষিণ আমেরিকায় আয়োজিত প্রথম বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপেই ব্রাজিল প্রতি আট বছর পর পর ইউরোপেবিশ্বকাপ আয়োজনের ঐতিহ্য ভঙ্গ করতে যাচ্ছে।
১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হওয়া সবকয়টি দল এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহনের সুযোগ পেয়েছে। এখন পর্যন্ত দক্ষিন আমেরিকায় ৪ বার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে যার সবকয়টিই জিতেছে দক্ষিণ আমেরিকান কোন দল।
পরিচ্ছেদসমূহ
[আড়ালে রাখো]মনোনয়ন প্রক্রিয়া[সম্পাদনা]
মূল নিবন্ধ: ফিফা বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ
ফিফা পর্যায়ক্রমিকভাবে মহাদেশভিত্তিক ২০১৪ সালের স্বাগতিক দেশের জন্যে দক্ষিণ আমেরিকাকে পূর্ব নির্ধারিত করেছিল। ফিফা পূর্বেই পর্যায়ক্রমিকভিত্তিতে স্বাগতিক দেশ নির্ধারণের জন্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করে।[২] কিন্তু ২০১৪ সালের পর এ সিদ্ধান্ত বলবৎ হবে না বলে ঘোষণা করে।
কলম্বিয়া ২০১৪ সালের জন্যে স্বাগতিক দেশ হবার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল[৩] কিন্তু প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে।[৪] কোরিয়া-জাপানের সফলভাবে বিশ্বকাপ সমাপণের পর চিলি এবং আর্জেন্টিনাও যৌথভাবে স্বাগতিক দেশ হবার জন্যে কিছুটা আগ্রহ প্রকাশ করেছিল; কিন্তু যৌথ ডাক প্রক্রিয়া অগ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা বাতিল হয়ে যায়। ব্রাজিলও স্বাগতিক দেশ হবার জন্যে আগ্রহ প্রকাশ করে। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল ফেডারেশন কনমেবল ব্রাজিলকে স্বাগতিক হবার জন্যে সমর্থন ব্যক্ত করে।[৫] ফলে ব্রাজিল একমাত্র দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে কনমেবলের মাধ্যমে ডিসেম্বর, ২০০৬ সালে ডাক প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে সমাপণের জন্যে প্রস্তাবনা পাঠায়। ঐ সময়ে কলম্বিয়া, চিলি এবং আর্জেন্টিনা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে ফেলে। ভেনেজুয়েলা ডাকে অংশগ্রহণ করেনি।
এরফলে ব্রাজিল প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষবিহীন অবস্থায় ডাক প্রক্রিয়ায় জয়লাভ করে। ৩০ অক্টোবর, ২০০৭ সালে ফিফা নির্বাহী পরিষদ স্বাগতিক দেশ হিসেবে ব্রাজিলের নাম ঘোষণা করে।[৬]
বাছাই[সম্পাদনা]
মূল নিবন্ধ: ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
২০১১ সালের ৩০ জুলাই রিও দি জেনিরোর মারিনা দা গ্লোরিয়ায় ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।[৭][৮] আয়োজক দেশ হিসেবে, ব্রাজিল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়।
২০৮টি ফিফা জাতীয় দলের মধ্যে ২০৩টি দল বাছাইপর্বে অংশগ্রহন করে, যা শুরু হয় ২০১১ সালের ১৫ জুন থেকে এবং শেষ হয় ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর। ২০১০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহনকারী ৩২টি দেশের মধ্যে ২৪টি দেশ ২০১৪ বিশ্বকাপে অংশগ্রহনের সুযোগ পায়। এবারই প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে অংশগ্রহনের সুযোগ পায় বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা।[৯] এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করতে ব্যর্থ দেশগুলোর মধ্যে র্যাংকিং এ সবচেয়ে উপরে অবস্থানকারী দেশইউক্রেন (১৮)।[১০] ওএফসি অঞ্চল থেকে কোন দল ২০১৪ বিশ্বকাপের মূলপর্বে অংশগ্রহনের সুযোগ পায়নি।
চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহনকারী দল[সম্পাদনা]
নিচের ৩২টি দল বিশ্বকাপের মূলপর্বে অংশগ্রহনের সুযোগ পেয়েছে। নিচে দলগুলোকে প্রতিযোগিতা পূর্ব র্যাংকিংসহ দেখানো হয়েছে।[১১]
|
|
|
পুরস্কারের অর্থ[সম্পাদনা]
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল অন্তত ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কারসরূপ পাবে। চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ দল পাবে যথাক্রমে ৩৫ মিলিয়ন ও ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৬ দলের পর্বে হেরে যাওয়া দলগুলো পাবে ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া দলগুলো পাবে ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বকাপ আসরের জন্য ক্লাব থেকে বিদায় নেওয়ার সময় খেলোয়াড়রা যেসব ক্লাবে খেলে থাকেন সেসব ক্লাবকে খেলোয়াড়দের বীমা এবং অন্যান্য খরচ বাবদ দেওয়া হবে ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বমোট, ৫৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ খরচ করবে ফিফা, যা একটি নতুন রেকর্ড। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে ফিফা খরচ করেছিল ৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।[১২]
মাঠসমূহ[সম্পাদনা]
আঠারোটি শহরকে বিশ্বকাপের সম্ভাব্য আয়োজক শহর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়: বেলেম, বেলো অরিজন্ঠ, ব্রাজিলিয়া, কাম্পো গ্রান্দে, কুইয়াবা, কুরিতিবা, ফ্লোরিয়ানোপোলিস, ফর্তালিজা, গোইয়ানিয়া, মাসেইও, মানাউশ, নাতাল,পোর্তো আলেগ্রে, রেসিফি, রিও ব্রাঙ্কো, রিউ দি জানেইরু, সালভাদোর এবং সাঁউ পাউলু.[১৩]
ফিফা প্রস্তাব দেয় যে একাধিক শহরে দুইটি স্টেডিয়াম ব্যবহার করা যাবে না এবং আয়োজক শহরের সংখ্যা হতে হবে আট থেকে দশটি। অবশ্য, ব্রাজিলীয় ফুটবল কনফেডারেশনের তত্কালীন প্রধান রিকার্দো তেইশেইরা পুরো দেশের স্বার্থের জন্য বারোটি স্টেডিয়াম ব্যবহারের প্রস্তাব দেয়। যা ২০০৮ সালের ডিসেম্বর ফিফা কর্তৃক গৃহীত হয়।[১৪]
২০০৯ সালের ৩১ মে, বারোটি আয়োজক শহরের নাম ঘোষণা করা হয়। বেলেম, কাম্পো গ্রান্দে, ফ্লোরিয়ানাপোলিস, গোইয়ানিয়া এবং রিও ব্রাঙ্কোকে বাতিল করা হয়।[১৫] ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে, মাসেইও তাদের প্রর্থীতা বাতিল করে। নির্বাচিত বারোটি শহর ব্রাজিলের বারোটি প্রদেশের রাজধানী, যা ব্রাজিলের সমস্ত প্রধান অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করে।[১৬] এর ফলে প্রতিযোগিতা চলাকালে দলগুলোর দীর্ঘ ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে।[১৭]
প্রায় ৩.৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্টেডিয়াম প্রকল্পগুলোর পেছনে ব্যয় করা হয়েছে।[১৮] আয়োজক শহরগুলোর মধ্যে পাঁচটি শহরে বিশ্বকাপের জন্য বিশেষভাবে নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। রাজধানী ব্রাজিলিয়ার এস্তাদিও ন্যাশিওন্যাল মানে গারিঞ্চা ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে তৈরি করা হয় এবং অপর ছয়টি স্টেডিয়ামের ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করা হয়।[১৯] রিউ দি জানেইরুতে অবস্থিত এস্তাদিও দো মারাকানা বারোটি স্টেডিয়ামের মধ্যে সবচেয়ে বড়। যা একটি বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড বহন করে (১৯৯,৮৫৪)। এই স্টেডিয়ামেই প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে। সিবিএফ এর মূল উদ্দেশ্য ছিল উদ্বোধনী খেলাটি সাঁউ পাউলুর এস্তাদিও দো মরুম্বিতে আয়োজন করার, কিন্তু ২০১০ সালে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়, যখন প্রয়োজনীয় উন্নয়নের জন্য তারা আর্থিক নিশ্চয়তা প্রদানে ব্যর্থ হয়। উদ্বোধনী খেলার জন্য বেছে নেওয়া হয় অ্যারেনা করিন্থিয়ান্সস্টেডিয়ামটিকে।[২০]
প্রথম নতুন স্টেডিয়াম ফর্তালিজার ক্যাস্তেলাও, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ব্যবহার শুরু হয়।[২১] ছয়টি স্টেডিয়ামকে ২০১৩ কোপা লিবের্তাদোরেসের সময় ব্যবহার করা হয়।[২২] অপর ছয়টি স্টেডিয়ামের কাজ ফিফার বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ এর মধ্যে সম্পন্ন হবে না।[২৩] নতুন স্টেডিয়াম অ্যারেনা করিন্থিয়ান্সের নির্মাণ কাজের সময় ক্রেন ধ্বসে পড়ার কারণে এর নির্মাণ কাজে বিঘ্ন ঘটে এবং দুইজন নির্মাণ কর্মী নিহত হয়।[২৪]
রিউ দি জানেইরু | ব্রাজিলিয়া | সাঁউ পাউলু | ফর্তালিজা |
---|---|---|---|
এস্তাদিও দো মারাকানা | এস্তাদিও ন্যাশিওন্যাল মানো গারিঞ্চা[২৫] | অ্যারেনা করিন্থিয়ান্স | এস্তাদিও ক্যাস্তেলাও |
ধারণক্ষমতা: ৭৬,৯৩৫[২৬]
(উন্নয়নকৃত)
| ধারণক্ষমতা: ৭০,০৪২[২৭]
(নতুন স্টেডিয়াম)
| ধারণক্ষমতা: ৬৮,০০০ (নতুন স্টেডিয়াম) | ধারণক্ষমতা: ৬৪,৮৪৬[২৮]
(উন্নয়নকৃত)
|
বেলো অরিজন্ঠ | পোর্তো আলেগ্রে | ||
এস্তাদিও মিনেইরাও | এস্তাদিও বেইরা-রিও | ||
ধারণক্ষমতা: ৬২,৫৪৭
(উন্নয়নকৃত)
| ধারণক্ষমতা: ৫১,৩০০[২৯] (renovated)[৩০] | ||
সালভাদোর | রেসিফি | ||
অ্যারেনা ফোন্তে নোভা | অ্যারেনা পেরনামবুকো | ||
ধারণক্ষমতা: ৫৬,০০০[৩১]
(নতুন স্টেডিয়াম)
| ধারণক্ষমতা: ৪৬,১৫৪
(নতুন স্টেডিয়াম)
| ||
কুইয়াবা | মানাউশ | নাতাল | কুরিতিবা |
অ্যারেনা পান্তানাল | অ্যারেনা দা আমাজনিয়া | অ্যারেনা দাস দুনাস | অ্যারেনা দা ব্যাইশাদ |
ধারণক্ষমতা: ৪২,৯৬৮ (new stadium) | ধারণক্ষমতা: ৪২,৩৭৪ (new stadium) | ধারণক্ষমতা: ৪২,০৮৬ (new stadium) | ধারণক্ষমতা: ৪৩,৯৮১[৩২] (উন্নয়নক্রিত) |
Nenhum comentário:
Postar um comentário